TMC Protest on Bolpur University Teacher Salary Issue

বেতন বকেয়া! বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ

তিন মাস ধরে বন্ধ বেতন, তাই নিয়ে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের উপাচার্যের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখালেন, স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের আলোচনা চক্রে যোগ দিতে আসা বিজ্ঞানীরা দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়েন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ

তিন পাস ধরে বন্ধ বেতন, বহুদিন ধরে বলেও মেলেনি কোন সুরাহা, অবশেষে তাই রাস্তা বিক্ষোভের।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা।
বিক্ষভের নেতৃত্ব দেন রায়পুর-সুপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নিখিল বাছার।
বিক্ষোভে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অস্থায়ী কর্মীও যোগ দেন।
যে সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়য়ের কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখান, ঐ সময়েই অন্তর্বর্তী উপাচার্যের গাড়ি আটকে পড়ে।
তাঁর সঙ্গে জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের আলোচনায় অংশ নিতে আসা কয়েকজন বিজ্ঞানীও ছিলেন। তাঁদের গাড়িও আটকে রেখে চলে বিক্ষোভI প্রায় দুই ঘণ্টা পর, উপাচার্যের আশ্বাসে শেষ হয় বিক্ষোভ ।
বিক্ষোভ ঘিরে নিখিল বাছার বলেন, "যাঁরা এখানে কাজ করছেন, তাঁরা তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। স্থানীয়দের বাদ দিয়ে বাইরে থেকে লোক নিয়ে নিয়োগ করা হয়েছে। এই কারণেই আমরা আন্দোলনে নেমেছি।" তবে তিনি উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অস্থায়ী কর্মী শুকুর আনসারি বলেন, “তিন মাস ধরে আমাদের বেতন হয়নি। আমরা বারবার উপাচার্যকে জানিয়েছি, কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।”
ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দিলীপ কুমার মাইতি বলেন, উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে অর্থ না আসার কারণে বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তিনি কর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন যে, এক সপ্তাহের মধ্যেই বেতন মিটিয়ে দেওয়া হবে।
ইতিমধ্যেই তিনি বিষয়টি মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে জানিয়েছেন। এই বিষয়ে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ নাকি আন্দোলনকারীদের ফোনও করেছিলেন, কিন্তু ফোন ধরেননি তারা। এছাড়া, পুরো ঘটনা মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।

বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা

২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা শুরু হয়। প্রথমদিকে সীমিত সংখ্যক শিক্ষক এবং শ’খানেক শিক্ষার্থী নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের পঠন-পাঠন শুরু হয়।
তবে নিজস্ব ভবন না থাকায় আইটি হাবের ভাড়া করা ঘরেই এতদিন ক্লাস নিতে হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৫০০ হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক স্বপন দত্ত। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্বাগত সেন তিন মাসের জন্য উপাচার্যের দায়িত্ব নেন।
এরপর, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক দিলীপকুমার মাইতিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করেন। নতুন উপাচার্য ভবন নির্মাণের কাজে উদ্যোগ নেন।

সিধো কানহু মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের (SKMU) অশিক্ষক কর্মীদের ধর্মঘট

শুধু বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, এই একই বেতনের ঝামেলাতে ভুগছে রাজ্যের অন্যতম সিধো কানহু মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মীরাও।
দীর্ঘ ৭৭ দিন ধরে বিক্ষোভ আন্দোলন প্রদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়য়ের করমিরাআন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন কর্মীরা। এবং চুক্তিভত্তিক কর্মীদের ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে বাধ্য করেন। তারা অভিযোগ করেন যে ২০১৬ সাল থেকে তাদের ন্যায্য দাবি সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উপেক্ষা করে আসছে।
অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিমল প্রসাদ সিং আন্দোলনরত কর্মীদের আশ্বাস দিয়েছেন যে, তাদের দাবিগুলো, বিশেষ করে সপ্তম বেতনক্রম বাস্তবায়নের বিষয়টি শীঘ্রই সমাধান করা হবে। এরপরেই আন্দোলন ভাঙ্গেন তারা।
ধর্মঘটের কারণে গত তিন মাস ধরে অশিক্ষক কর্মীরা বেতন পাননি। ফলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদর দফতর এবং সাঁওতাল পরগনা বিভাগের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বেতন নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। সঠিকভাবে বেতন না পাওয়াতে কর্মীদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে অসন্তোষ। এই অসন্তোষ ধর্মঘটের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দাফতরিক কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

#WestBengalNews #UniversityProtest #TeacherSalaryIssue #TMCProtest #EducationCrisis