Happening Now
Lorem ipsum, dolor sit amet consectetur
লক্ষ্মীর ভান্ডার জালিয়াতি: টাকা ঢুকছে ভুতুড়ে অ্যাকাউন্টে?
একজনের আধার নম্বর দিয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাচ্ছে অন্য জন। এমনি বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন পুরুলিয়ার পার্বতী রজক নামে এক বাসিন্দা। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে লক্ষ্মীর ভান্ডার জালিয়াতির অভিযোগ করেও মেলেনি সুরাহা।


আবেদন করেও প্রকল্প থেকে বঞ্চিত পার্বতী রজক
- কেটে গেছে কয়েক বছর, যেখানে প্রতি মাসে নির্ধারিত সময়ে বাংলার মা বোনেদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাওয়া উচিত সেখানে কয়েকবার আবেদন করেও টাকা আসেনি পুরুলিয়ার বাসিন্দা পার্বতীর। বরং সেই টাকা নাকি ঢূকেছে অন্য মহিলার অ্যাকাউন্টে!
- ২০২১ সালে পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের চিপিদা-ভান্ডারপুয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা, তপশিলি জাতির সদস্যা পার্বতী রজক ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের জন্য দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে আবেদন করেন।
- তবে তাঁর আবেদন নথিভুক্ত হয়নি এখনও না। এরপরও তিনি হাল না ছেড়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যতবার দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প হয়েছে, ততবারই তিনি নতুন করে আবেদন করেছেন। কিন্তু কপাল খারাপ তাতেও তিনি এই প্রকল্পের সুবিধা পাননি।
- অবশেষে ২০২৫এ এত বছর বাদে বোঝা গেল আসল সমস্যাটা, কেন টাকা ঢুকছিল না পার্বতীর অ্যাকাউন্টে।
- ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে দুমকাডি গ্রামে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প হয়। গত ২৪ তারিখ পার্বতী রজক পুনরায় আবেদন করতে গেলে জানতে পারেন, তাঁর নামে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বহুদিন ধরেই আসছে!
- মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে পার্বতীর। অবাক হয়ে তিনি তথ্য সংগ্রহ করেন এবং দেখেন, তাঁর আইডি নম্বর ব্যবহৃত হলেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি তাঁর নয়। টাকা আসছে তার নামে কিন্তু যাচ্ছে অন্যের ব্যাং অ্যাকাউন্টে।
- এই প্রতারণার বিষয়টি জানার পরই পার্বতী রজক দ্রুত ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানান। লিখিতভাবে তিনি জানান, তাঁর নামে পাঠানো টাকা অন্য একজনের অ্যাকাউন্টে যাচ্ছে। তিনি তাঁর প্রাপ্য টাকা ফেরত চান। লক্ষ্মীর ভান্ডার জালিয়াতি হচ্ছে তার সাথে।
তবে কার অ্যাকাউন্টে ঢূকছে টাকা?
- পার্বতীর প্রাপ্য টাকা পাচ্ছে অন্য কেউ, কিন্তু কে সে? প্রশাসনের কথাতেও পাওয়া যাচ্ছে অসঙ্গতি।
- বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলে দেখা যায়, পদ্মা রজক নামে এক মহিলার অ্যাকাউন্টে নাকি পার্বতী রজকের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের টাকা জমা পড়ছে। পদ্মা রজকের বাড়িও নাকি ভান্ডারপুয়ারা গ্রামে।
- কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জানিয়েছেন, এই নামে ওই গ্রামে কেউ থাকেন না! অর্থাৎ, এটি একটি সুপরিকল্পিতভাবে জালিয়াতির ঘটনা।
- প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে পার্বতী রজকের আবেদনপত্রের সঙ্গে অন্য কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর যুক্ত হল? ব্লক অফিসের কর্মীরাই এই ধরনের তথ্য সংক্রান্ত কাজ করে থাকেন। ফলে এই জালিয়াতির পিছনে ব্লক অফিসের কর্মীদের ভূমিকাই রয়েছে বলেই অভিযোগ উঠছে।
- ব্লক প্রশাসনের বিডিও জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পার্বতী রজকের আধার কার্ড ব্যবহার করে পদ্মা রজক টাকা পাচ্ছিলেন।
- সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়ে সেই অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো বন্ধ করা হয়েছে। নতুনভাবে পার্বতী রজক যাতে প্রকল্পের সুবিধা পান, সে ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
- পার্বতী রজকের স্বামী একজন হকার। তাঁর মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সংসার চালানোই তাঁদের জন্য কষ্টকর । অথচ বছরের পর বছর এই পরিবার সরকারি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হয়েছে শুধুমাত্র একটু ভুলের জন্য।
- এখন সবথেকে বড়ো প্রশ্ন হল, ২০২১ সাল থেকে যে টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে গেছে, তা কি পার্বতী রজক ফিরে পাবেন?
- মানুষকে সাহায্য করার জন্য বাহারি সরকারি প্রকল্পের অভাব নেই কিন্তু সেই প্রকল্পের সুবিধা যাতে সাধারণ মানুষ পায় তা সঠিকভাবে তা দেখার দ্বায়িত্ব কি সরকারের নয়?
- এর ঘটনা বিরল নয়। নদিয়ায় একই পরিবারের দুই জন, রাধা রাজোয়ার এবং প্রভাতী রাজোয়ার—তাদের আধার কার্ড দুটিতে পৃথক পৃথক নাম থাকলেও ছবি এবং আধার নাম্বর এক তারা দুইজনে একসঙ্গে লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদন জমা দিলেও একজন সরকারি সুযোগ-সুবিধা মিলেও আরেকজন দুয়ারে সরকারে একাধিকবার জমা দিলেও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কারণ হিসাবে জানতে পারেন তাদের দুজনেরই আধার কার্ডের নম্বর এক, আর সেই কারণে বঞ্চিত সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকেI
- এবার লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তমলুক শহরের একাধিক উপভোক্তা।
- শুধু প্রশাসনিক ভুল নয়, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে প্রচুর মহিলাও টাকা পাওয়ার জন্য কারচুপি করছেনI বালুরঘাটের জগদীশপুরের ভারতী দেবনাথ আসল আধার কার্ডে ইচ্ছাকৃতভাবে বয়স বাড়িয়েছেন এবং ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন। তবে নকল আধার কার্ডেও রেখেছিল আসল আধারের নম্বর। বিষয়টি ধরা পড়তেই বিডিও অফিস থেকে পালিয়ে গেলেন তিনি।
শুধু বঞ্চিত নয়, উপকৃত হয়েছে বাংলার মহিলারা
- বর্তমানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আওতায় প্রায় ২ কোটির উপর মহিলা রয়েছেন, মোট মহিলার সংখ্যা ৬১.১ শতাংশ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের উপর নির্ভর করে সাংসারিক উন্নতি ঘটিয়েছেন। আর ৬.৩ শতাংশ মহিলা ছোট ব্যবসা এবং বিনিয়োগ করছে।
- নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সংস্থা প্রতীচী ট্রাস্টের সমীক্ষায় ৮৫.৬শতাং শের বেশিরভাগ মহিলাই রাজ্য সরকারের এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে গার্হস্থ্য জীবনে ক্ষমতায়ন হয়েছে এবংসাংসারিক ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে।
- লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের দৌলতে ৭৫.৯ শতাংশ মহিলা পরিবারের খরচ চালাতে এই টাকা খরচ করছেন। ৪১.৮ শতাংশ মহিলা সন্তানদের শিক্ষার জন্য খরচ করছেন এবং ৩৪ শতাংশ মহিলারা এই টাকা নিয়ে নিজেদের ওষুধ কিনছেন।
- মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই প্রকল্পকে বাংলার "অমূল্য সম্পদ" বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানান, 'সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী' প্রকল্পের মাধ্যমে ২৪ হাজারের বেশি আবেদন এসেছে, যা খতিয়ে দেখা হয়েছে। পাশাপাশি, দুয়ারে সরকার ক্যাম্পেও লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য প্রচুর আবেদন জমা পড়ছে।




ব্রডকাস্ট চ্যানেল







ডেইলি ডিজিটাল নিউজ পেপার











Copyright © All Rights Reserved by Truee News Bangla is a copyright property of Independent Media Corp